বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও গুলির ঘটনায় সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নানসহ চার সাবেক সংসদ সদস্য এবং সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৯৯ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২০০ জনকে আসামি করে আদালতে দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের হয়েছে।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দোয়ারাবাজার উপজেলার এরোয়াখাই গ্রামের মো. হাফিজ আহমদ সুনামগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নির্জন কুমার মিত্রের আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় এক নম্বর আসামি করা হয়েছে, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল হুদা মুকুট, পর্যায়ক্রমে মামলার আসামীরা হলেন, সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী সুনামগঞ্জ- ৩ আসনের সাবেক এমপি এমএ মান্নান, সুনামগঞ্জ- ৫ আসনের সাবেক এমপি মুহিবুর রহমান মানিক, সুনামগঞ্জ- ১ আসনের সাবেক এমপি অ্যাড. রনজিত সরকার ও মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিন, সুনামগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র নাদের বখত, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক খায়রুল হুদা চপল, জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রেজাউল করিম শামীম, সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজন কুমার দাস, সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার সাবেক ওসি খালেদ চৌধুরী, সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক রিয়াজ আহমদ এবং আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের মধ্যে মঞ্জুর আহমদ খন্দকার, আব্দুল বাছিত, শংকর চন্দ্র দাস, রেজাউল আলম নিক্কু, আবুল কালাম, এহসান উজ্জল, অমল কর, প্রদীপ রায়, রিগ্যান, আপ্তাব উদ্দিন, কুদ্দুস ওরপে বেল কদ্দুস, বিন্দু তালুকদার, ফরিদ আহমদ ইমন, সুয়েব আহমদ চৌধুরী, জুবের আহমদ অপু, দীপঙ্কর কান্তি দে, আশিকুর রহমান রিপন, আলামিন রহমান, ফজলে রাব্বী স্মরণ, সজিব রঞ্জন দাশ সল্টু, লিখন আহমদ, জিসান এনায়েত রেজা, আহসান জামিল আনাস, লুৎফুর রহমান লিটন, জহির আলী, ফতেহপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রঞ্জিত চৌধুরী রাজন, জনি হোসেন, হাসানুজ্জামান ইস্পাহানী, ফজলুল হক, ফরহাদ, সাজন আহমদ, আবিদুর রহমান তারেক, নিরব, মেহের, আনোয়ার মিয়া আনু, হাসনাত হোসাইন, নুর হোসেন, ফয়সল আহমদ, নূরুল ইসলাম, তাজুল ইসলাম (সামিয়ান তাজুল), মো. ফারুক মিয়া, মিলন খান, রাসেল আহমদ, মো. রতন মিয়া, ফারুক আহমদ সুজন, তাজিম তিমু, মো. বাবুল মিয়া, মো. আবুল মিয়া, উকিল, ওবায়দুর রহমান কুবাদ, লিটন সরকার, নূরুল ইসলাম বজলু, নূরুল ইসলাম, আবুল হোসেন খাঁ, কামাল হোসেন, জগলু মিয়া, ইকবাল হোসেন, রিমন, জাওয়াদ, সাইদুল পলাশ, শাহরিয়ার নিহান, শিহাব, প্রিন্স রাজা, মিতুল, মুকুল, মাহির হোসেন, প্রিল, মসিবুর, শামসুল ইসলাম শামীম ওরফে শামস শামীম, মিজানুর রহমান, মেহদি হাসান সাকিব, মোস্তাক আহমদ, জমিরুল ইসলাম পৌরব, তুষার, মহিম তালুকদার, অয়ন, তাওসিফ, ছলিম উদ্দিন, সাহারুল আলম মুসাহিদ, শিমন চৌধুরী, আব্দুল কদ্দুস, খুর্শিদ, এবাদুর রহমান কুবাদ, শাহারিয়ার হোসেন বিপ্লব, জিকির আলী সহ অজ্ঞাত আরো ১৫০/২০০ জন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৪ আগস্ট সুনামগঞ্জ শহরের পুরাতন বাস স্টেশনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে বিনা উসকানিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। এ সময় গুলি, রামদা দিয়ে কুপিয়ে, পেট্রলবোমা ও ককটেল ফাটিয়ে বাদী মো. হাফিজ আহমদের ভাইসহ আরও কয়েকজনকে গুরুতর আহত করা হয়।
এছাড়া আহতদের সঠিক চিকিৎসা পেতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে। মামলায় দাবি করা হয়েছে, হামলাকারীদের মধ্যে কেউ সরাসরি অংশগ্রহণ করেছেন এবং কেউ হুকুম দিয়েছেন।
মামলা দায়ের শেষে বাদী মো. হাফিজ আহমদ বলেন, "আমি সুষ্ঠু বিচার চাই। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রয়োজন।"
বাদীপক্ষের আইনজীবী বিএনপি নেতা মো. মোশাহিদ আলী এবং অন্যান্য আইনজীবীরা বলেন, "আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে এই হামলা হয়েছে। পুলিশও এ হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল। আমরা দ্রুত বিচার আইনে মামলা করেছি এবং আশা করি আদালত সঠিক সিদ্ধান্ত দেবেন।"